বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায় মূল শহর হতে ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে সমুদ্র সমতল হতে ৩০০০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট আলুটিলা বা আরবারী পাহাড়ে আলুটিলা গুহা অবস্থিত। স্থানীয়রা একে বলে মাতাই হাকড় বা দেবতার গুহা। এটি খাগড়াছড়ির একটি নামকরা পর্যটন কেন্দ্র। এই গুহাটি খুবই অন্ধকার ও শীতল। কোন প্রকার সূর্যের আলো প্রবেশ করে না বলে মশাল নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়। সুড়ঙ্গের তলদেশ পিচ্ছিল এবং পাথুরে ও এর তলদেশে একটি ঝর্ণা প্রবহমান। গুহাটি দেখতে অনেকটা ভূ-গর্ভস্থ টানেলের মত যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৫০ ফুট। গুহাটির এপাশ দিয়ে ঢুকে ওপাশ দিয়ে বের হতে আনুমানিক ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে। গুহাটির উচ্চতা মাঝে মাঝে খুব কম হওয়ায় নতজানু হয়ে হেটে যেতে হয়।
খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে ১১ কি.মি. আর মাটিরাঙ্গা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কি.মি. দূরত্বে খাগড়াছড়ি-ঢাকা মূল সড়ক হতে আরও ১ কি.মি. দক্ষিণে "রিছাং ঝর্ণা" অবস্থিত। মূল সড়ক থেকে পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে, ঝর্ণার পথে ২৩৫ ধাপের সিঁড়ি দিয়ে নামতে হয়। বর্ষাকালে সিড়ি দিয়ে নামার সময়ই ঝর্ণার শব্দ শোনা যায় । উঁচু পাহাড়ের গা ঘেঁষে যেতে যেতে যে কারও দৃষ্টি আটকে যাবে পাহাড়ী সবুজের সমারহে। আনুমানিক ১৯৯৩-৯৪ সালে এই প্রাকৃতিক ঝর্ণাটি আবিষ্কৃত হয় বলে জানা যায়; জুম চাষের সুবাদে ঝর্ণাটি সবার নজরে আসে।
আকর্ষণ:
১০০ ফুট উঁচু পাহাড় থেকে নিচে গড়িয়ে পড়ে ঝর্ণার জলধারা। পানির গতিপথ ঢালু হওয়ায় "প্রাকৃতিক ওয়াটার স্লাইডিং"- এর সৃষ্টি হয়েছে, যা এই ঝর্ণার প্রধান আর্কষণ। শুধু ঝর্ণাটিই নয়, ঝর্ণা অভিমুখে সমগ্র যাত্রা পথটাই দারুন রোমাঞ্চকর। ঝর্ণার পথে পাহাড়ি ঢালু রাস্তা আর সিঁড়ি এবং চারদিকের সবুজের সমারহ বেশ আকর্ষণীয়।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড় আর ঝর্ণায় সমৃদ্ধ খাগড়াছড়ি জেলায় অবস্থিত হর্টিকালচার পার্ক (Horticulture Park) খুব জনপ্রিয় একটি পার্ক। জেলা শহরের জিরোমাইল এলাকায় ২২ একর পাহাড় জুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে এই হর্টিকালচার হ্যারিটেজ পার্ক। এই পার্কে রয়েছে অসাধারণ সুন্দর একটি ঝুলন্ত ব্রিজ এবং বড় একটি সুইমিং পুল। হর্টিকালচার পার্ক এর ভিতরের পরিবেশ বেশ মনোরম। বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবার নিয়ে সময় কাটানোর জন্য সেরা একটি জায়গা। পার্কের পশ্চিম পাশ থেকে খাগড়াছড়ি শহরে ভিউটা অসাধারণ। এছাড়াও পার্কের ভিতরে রয়েছে টয় ট্রেন, দোলনা, ওয়াচ টাওয়ার। এছাড়া রয়েছে ফুলের বাগান ও বিভিন্ন প্রজাতির ফলের গাছ।
এছাড়াও স্কুল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিকনিক এর জন্যে পার্কের সামনে পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। পার্কের বিতরে যে লেকটি রয়েছে সেখানে চাইলে নৌকা নিয়ে ঘুরে দেখতে পারেন পার্কের সৌন্দর্য। দুই পেশে পাহাড় আর মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে লেক।
পার্কের প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা।