১৯৩৫ থেকে ২০২২ সাল। অনন্ত কালের ক্ষুদ্র একটি অংশ। কালের স্রোতে অনেক কিছুই ভেসে যায়। কিন্তু কোন মহৎ উদ্যোগ, কালজয়ী সৃষ্টি এই স্রোতে ভেসে যায় না। ১৯৩৫ সালে যে বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল আজ তা এক বৃহৎ মহীরূহরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। শেখঘাট এলাকায় তখনকার সময়ে মেয়েরা ছিল অবরোধবাসিনি। এদের শিক্ষার কথা চিন্তা করা কিংবা এদের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠা করার কথা মনে স্থান দেওয়া শুধু ঝুকিপূর্ণই ছিলনা এটি ছিল চরম দুঃসাহসিকতার কাজ। শেখঘাটবাসী বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবী মরহুম শেখ সিকন্দর আলী সাহেবের ন্যায় বলিষ্ট ও নির্ভিক ব্যাক্তির পক্ষেই শুধু এমন একটি কঠিন কাজের দায়িত্ব নেয়া সম্ভব ছিল।
১৯৩৫ সালের ১লা জানুয়ারি তিনি তার শ্রদ্বেয়া মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেন মঈনুন্নেছা প্রাথমিক বিদ্যালয়।সিলেট শহরের দক্ষিন-পশ্চিম এলাকায় মেয়েদের জন্য কোন শিক্ষাপ্রতিষ্টান না থাকায় বিদ্যালয়টি পরম করুণাময় ইশ্বরের আর্শীবাদরুপে আর্বীভূত হয় এলাকাবাসীর জন্য। সুরমা নদীর ওপার থেকেও মেয়েরা আসতে থাকে শিক্ষা লাভের জন্য। শেখঘাটবাশী মরহুম জনাব আব্দুল খালিক এডভোকেট সাহেবের সক্রিয় প্রচেষ্টায় ১৯৬৮ সালে বিদ্যালয়টি জুনিয়র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।তত্কালিন পরিচালনা কমিটির সভাপতি মরহুম আলহাজ্ব মাহমুদ আলী ও প্রতিষ্টাতা জনাব মরহুম শেখ সিকন্দর আলী সাহেব এর পুত্র মরহুম মঈনুল আহসান(বাবুল মিয়া) সাহেব বিদ্যালয়ের প্রতিটি সংকট মুহূর্তে অম্লান বদনে সাহায্য-সহযোগীতা করে সকলকে আবদ্ধ করে রেখেছেন।
ছাত্রীসংখ্যা ক্রমশ বৃদ্বি পাওয়া স্বধীনতার পূর্বে ঘটিত পরিচালনা কমিটির সদ্স্যবৃন্দের প্রচেষ্টায় ১৯৭৪ সালে পুরাতন অবস্থানে ৬ শতাংশ ভুমি বিক্রি করে মেয়েদের জন্য অধিকতর উপযোগী বর্তমান অবস্থানের ৫২ শতক ভুমি ক্রয় করে বিদ্যলিয় কে এখানে স্থানান্তর করা হয়। একই সময়ে নবম শ্রেণি চালু করে একে উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্নীত করার পদক্ষেপ গ্রপণ করা হয়। বিদ্যালয়ের তত্কালনি দৈন্যদশা এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ভুমি ক্রয়সহ এর উৎকর্ষ সাধনে তৎকালীন পরিচালনা কমিটির প্রধান পৃষ্টপোষক শ্রী বিমেলেন্দু দাস মহাশয়(সাধু বাবা) এবং সদস্য জনাব ইবনে আজিজ সাহেব বিশেষ ভুমিকা পালন করেন।